প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫ ২১:৪৫
ছবি: সংগৃহীত
সিলেটের লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে দুই উপদেষ্টার নির্দেশনা উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ নেতা তমিজ উদ্দিনের নেতৃত্বে চলছে পাথর ভাঙ্গার মেশিন ক্রাশার ও স্কেভেটর। প্রায় দেড় মাস ধরে এভাবে দিনে-রাতে চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতার কারণেই এখানে অন্তবর্তীকালীন দুই সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছেনা। এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, লোভা নদীর উত্তর পাড়ে সাউদগ্রামের পশ্চিমে টিলার মতো সারি সারি পাথরের স্তুপ রয়েছে। এ স্তুপগুলোতে ক্রাশার মেশিন দিয়ে পাথর ভাঙ্গার কাজ চলছে। একই সাথে পাথর উত্তোলনে স্কেভেটরও ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ১নং লক্ষী প্রসাদ পূর্ব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তমিজ উদ্দিন চেয়ারম্যান পাথরগুলোর মালিকানা দাবি করে পাথর ভেঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করছেন। আর তাকে সহযোগিতা করছেন জাপা নেতা আব্বাস উদ্দিন সহ বেশ কয়েকজন ব্যাক্তি।
এদিকে, প্রায় দু’সপ্তাহ আগে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকা পরিদর্শন করেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এসময় দুই উপদেষ্টা সিলেটের সব পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে কোয়ারি এলাকায় সবধরনের ক্রাশার মেশিন বন্ধ রাখতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা কানাইঘাটের লোভাছড়ায় বাস্তবায়ন হয়নি।
একাধিক সূত্র জানায়, ২০২০ সালের জুলাই মাসে লোভাছড়া কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে মজুদ করা প্রায় এক কোটি ঘনফুট পাথর জব্দ করে প্রশাসন। পাঁচ বছর পর খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) প্রায় ৫৬ লাখ ঘনফুট পাথর গোপন করে ৪৪ লাখ ঘনফুট পাথর নিলামের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। এ ঘটনায় সিলেটের দক্ষিণ সরমার গোঠাটিকর এলাকার সামি এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী নজরুল ইসলাম জনস্বার্থে উচ্চ আদালতের ধারস্থ হন। অভিযোগ বিচারাধীন থাকাবস্থায় আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে বিএমডি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে পিয়াস এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে জব্দকৃত ৪৪ লাখ ঘনফুট পাথর বিক্রি করে দেয়।
এদিকে, নিলামে গোপন ৫৬ লাখ ঘনফুট পাথর ও নদী থেকে নতুনভাবে আরও পাথর উত্তোলন করে বিক্রির জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাপা নেতারা হাতেহাত মিলিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র জানায়। তারা কোয়ারি এলাকায় দফায় দফায় গোপন বৈঠক করে নানা পরিকল্পনাও করছেন। এ নিয়ে কোয়ারি এলাকায় সাধারণ ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার বলেন, ৪/৫ দিন আগে কোয়ারি এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে। আর পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সাথে কথা বলতে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
স্বদেশ থেকে আরো পড়ুন